অনেকে আরসোলাকে “তেলাপোকা” বা “তেলচাটা” বলে থাকেন। আশ্চর্যের বিষয়, এই ছোট্ট প্রাণি থেকেই তৈরি হয় এক হোমিওপ্যাথিক ওষুধ, যা বিশেষভাবে হাঁপানি রোগে কার্যকর।
১৯শ শতকের কলকাতা ছিল শিক্ষার ও সমাজ সংস্কারের কেন্দ্র। সেই সময়ের এক আলোকবর্তিকা ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তিনি শুধু একজন শিক্ষাবিদ বা সমাজসংস্কারকই ছিলেন না, মানবতাবাদী চিন্তক হিসেবেও পরিচিত। মানুষের কষ্ট দেখলে তিনি কখনো চুপ থাকতে পারতেন না।
বিদ্যাসাগর হোমিওপ্যাথির প্রতি গভীর আগ্রহী ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, নতুন ধারার চিকিৎসা যদি মানুষের উপকারে আসে, তা অবশ্যই গ্রহণযোগ্য। শোনা যায়, তিনি নিজে এই হোমিওপ্যাথিক ওষুধ সংগ্রহ করে দরিদ্র ও অসুস্থ রোগীদের মাঝে বিতরণ করতেন। অনেক রোগী তাঁর এই মানবিক উদ্যোগে সুস্থ হয়ে উঠতেন।
একটি চমৎকার কৌশলও ছিল — কেউ যদি ওষুধ খেতে নারাজ হতো, তখন চায়ের সঙ্গে দুধ ও চিনি মিশিয়ে এটি খাওয়ানো হতো। আগুনে সিদ্ধ করার পর এতে আরসোলার কোনো দুর্গন্ধ থাকত না। ফলে রোগী সহজেই ওষুধ গ্রহণ করতে পারতেন।
রোমাঞ্চকর হলেও সত্যি, চীনের মানুষ আজও আরসোলাকে এক ধরনের সুস্বাদু খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে।
এই গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয়, প্রকৃতির অদ্ভুত জিনিসগুলোও মানুষের উপকারে আসতে পারে, যদি যথাযথ জ্ঞান ও যত্ন নিয়ে ব্যবহার করা হয়।
তথ্যসূত্র: কম্পারেটিভ মেটিরিয়া মেডিকা (ডাঃ এন.সি. ঘোষ)

No comments:
Post a Comment